কেন পড়ব লোকপ্রশাসন
ইতিহাস, বিজ্ঞান, সাহিত্য, প্রকৌশল…কত রকম বিষয় আছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়। কোন বিষয়ে আমি পড়ব, সিদ্ধান্ত নেওয়াই কঠিন। স্বপ্ন নিয়ের এই বিভাগে আমরা একেকটি বিষয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিই। আজ লোকপ্রশাসন সম্পর্কে বলেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহমুদুর রহমান
কী পড়ানো হয়?
জন্ম থেকে শুরু করে সব জায়গাতেই আমরা
প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত। কোনো একটা কাগজ বা সনদপত্র নেওয়ার জন্য আমাদের কোনো
না কোনো অফিসে যেতে হয়। সেই অফিসের কিছু নিয়মকানুন থাকে, যেগুলোর মধ্যে
আমাদের পড়তে হয়। এখানে একটা বিষয় দৃশ্যমান, সরকারের কাজ দুটো—সেবা আর
ব্যবস্থাপনা। সরকার কিছু সেবা দিয়ে থাকে এবং এই সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু
নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। জনগণের সেবাটা মুখ্য রেখে সরকার কীভাবে এই দুটো
কাজ পুরোপুরি করতে পারে, এটাই লোকপ্রশাসনের মূল বিষয়। আবার সরকার যেসব নীতি
গ্রহণ করে—তার দুটো ধাপ থাকে। নীতি প্রণয়ন ও নীতি বাস্তবায়ন। সাধারণত বলা
হয়, লোকপ্রশাসনের মূল কাজ দ্বিতীয়টা। নীতি প্রণয়নের কাজটা সংসদ বা আইনসভার।
তবে পরোক্ষভাবে একজন প্রশাসকও এখানে ভূমিকা রাখতে পারেন। এসব কারণে
প্রশাসন রাজনীতি থেকে পুরোপুরি আলাদা হতে পারে না। তাই লোকপ্রশাসনের মূল
তত্ত্বগুলো রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে কিছু এসেছে, আবার ব্যবস্থাপনা থেকেও কিছু
এসেছে। এবং ‘ম্যানেজারিয়াল’ ধারণাটা আসলে লোকপ্রশাসনের ধারণার পরবর্তী
পদক্ষেপ।
একজন শিক্ষার্থীকে এসব বোঝানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের
শুরুতে আমরা তাত্ত্বিক কিছু বিষয় পড়াই। প্রশাসনের একেবারে তাত্ত্বিক
দিকগুলোর পাশাপাশি সমাজবিজ্ঞানের মূল যে বিষয়গুলো আছে, যেমন অর্থনীতি,
সমাজতত্ত্ব, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয় পড়ানো হয় তখন। এ ছাড়া
হিসাববিজ্ঞান, তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কেও আমরা একটা প্রাথমিক ধারণা দিই।
পরবর্তীকালে আমরা ব্যবহারিক দিক, যেমন বাংলাদেশের প্রশাসন ও রাজনীতির
ইতিহাস, আমাদের স্থানীয় সরকার ইত্যাদি সম্পর্কে জানানো শুরু করি। এসবের পর
শিক্ষার্থীরা একটু তুলনামূলক আলোচনায় ঢুকে পড়ে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে
আমাদের লোকপ্রশাসনের তুলনার পাশাপাশি ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু বিষয়,
যেমন মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, ব্যাংক ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি পড়তে হয়। চতুর্থ
বর্ষের পড়ালেখা হয় গবেষণামূলক। প্রশাসনের ব্যাপারে সাম্প্রতিক যে
অগ্রগতিগুলো হয়েছে, সেগুলো সম্পর্কেও জানানো হয়।