গৃহকর্মীকে খুন্তির ছ্যাঁকা দেওয়ার ঘটনায় দম্পতি আটক
ভৈরবে গৃহকর্মীকে লাঠিপেটা করে গরম পানি ঢেলে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগে বুধবার মামলা হয়েছে। গৃহকর্ত্রী ও গৃহকর্তার অমানুষিক নির্যাতনে কাজের মেয়ে সাদিয়া বেগম (১৮) গুরুতর আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছে। তার বাবার নাম মরহুম জামাল মিয়া এবং বাড়ি ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার সিংগেরকান্দা গ্রামে। ভৈরব বাজারের গিয়াস উদ্দিন মিয়ার কন্যা গৃহকর্ত্রী মেহেরুন্নেছা অপি (২৯) তুচ্ছ ঘটনায় তার পিঠে লাঠিপেটাসহ হাতে গরম পানি ঢেলে ঝলসে দিয়েছে বলে তার অভিযোগ। গৃহকর্তার নাম তানভির রাফছান সাদলী (৩০)। বাড়ি শহরের ঘোড়াকান্দা গ্রামে হলেও সে তার স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরের ভৈরব বাজার বাসায় থাকে। গৃহকর্মীর অভিযোগ সাদলী ও তার স্ত্রী অপি দু’জনে মিলেই তাকে নির্যাতন করে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় গৃহকর্মী আহত সাদিয়ার খালা ভৈরব পৌর প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আল-আমিনের সহায়তায় ও পরামর্শে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। মঙ্গলবার রাতেই খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে গৃহকর্মীর শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে তার কাছ থেকে বক্তব্য শোনার পর রাত সাড়ে ১২টায় অভিযুক্ত দু’জনকে (তাদের ভৈরব বাজারের বাসা) থেকে গ্রেফতার করে। বুধবার দু’জনকে কিশোরগঞ্জ আদালতে চালান দেয়া হয়। জানা গেছে, সাত বছর আগে সাদিয়া বেগম তার খালার মাধ্যমে ভৈরব বাজারের মেহেরুন্নেছা অপির বাসায় কাজের মেয়ে হিসেবে কাজ পায়। সে জানায় প্রথম দিকে তাকে কাজের জন্য কোনো নির্যাতন করা হতো না। কয়েক বছর যাওয়ার পর কাজ করতে গিয়ে তুচ্ছ ঘটনায় যখন-তখন তাকে মারধরসহ প্রায়ই তার হাতে গরম পানি ঢেলে ছ্যাঁকা দিত গৃহকর্ত্রী। অনেক সময় তার হাত-পা বেঁধে মারধর করত। সোমবার কাজের সময় টেবিলে রাখা দুটি চুরি ভেঙে গেলে তাকে গরম পানি ঢেলে হাতে ছ্যাঁকা দেয়া হয় বলে তার অভিযোগ। এরপর রাতে সে পালিয়ে খালার ভৈরবসহ রানীবাজারের ভাড়া বাসায় আশ্রয় নেয়। অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রী মেহেরুন্নেছা অপি নির্যাতনের কথা স্বীকার করে বলেন, সাদিয়া একটি স্বর্ণের চেইন চুরি করেছে। বাসার বাইরে গেলে সে আজেবাজে ছেলের সঙ্গে কথা বলে। এ কারণে তাকে বাসার বাইরে যেতে বাধা দিতাম। সাদিয়া স্বর্ণের চেইন চুরির অভিযোগ অস্বীকার করে।