প্রস্রাবে সংক্রমণ কেন হয়, কী করবেন?

প্রস্রাবের সংক্রমণ খুবই অস্বস্তিদায়ক একটি রোগ। এই রোগে তলপেটে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। পুরুষের তুলনায় নারীরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।

তাই প্রস্রাবে যেন সংক্রামণ না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আর এই রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।

প্রস্রাবে সংক্রমণ কেন হয়?

১. বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া (৯৫ শতাংশ) এবং কিছু ক্ষেত্রে ফাঙ্গাস, প্রোটিয়াস, ক্লেবসিলা, সিউডোমনাস অন্যতম। এ ছাড়া অনেকের এলার্জিজনিত কারণেও হতে পারে (সাময়িক হতে দেখা যায়)

২. দীর্ঘসময় মূত্রতন্ত্রে জীবাণু অবস্থান করলেই UTI-এর লক্ষণগুলো দেখা যায়।

৩. মূত্রনালির সংক্রমণ খুব বেশি হয় মেয়েদের। কারণ মেয়েদের মূত্রনালির দৈর্ঘ্য ছোট, মেয়েদের মূত্রনালির দৈর্ঘ্য মাত্র ১.৫ ইঞ্চি, অথচ ছেলেদের ৮ ইঞ্চি।

৪. মেয়েদের মূত্রদ্বার ও যোনিপথ খুব কাছাকাছি, মাসিক ঋতুস্রাবের সময় অনেক মেয়ে ময়লা, ছেঁড়া ও নোংরাজাতীয় কাপড় ব্যবহার করেন। এতে জীবাণু প্রথমে যোনিপথে ও পরে সংলগ্ন মূত্রনালিকে সংক্রমিত করে।

৫. মেয়েদের প্রস্রাব না করে আটকে রাখার প্রবণতা বেশি। তাই প্রস্রাবে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

কী করবেন?

১. এই রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন নিয়মিত ও পরিমিত পানি পান করা। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পানি পানের অভ্যাস গড়ে তোলা।

২. প্রস্রাব আটকে না রেখে যখনই বেগ আসে তখনই প্রস্রাব করা। ৩. ক্র্যানবেরি জুস খেলে মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ কমে যায়, তা খাওয়ার অভ্যাস করা।

৪. কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৫. মূত্রত্যাগের পর যথেষ্ট পানি ব্যবহার করা ও শারীরিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।

৬. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

৭. যৌন সহবাসের আগে প্রস্রাব ত্যাগ করতে হবে। এতে মূত্রনালিতে আসা সব জীবাণু পরিষ্কার হয়।

৮. স্যানিটারি প্যাড ঘন ঘন বদলিয়ে নিতে হবে। মেয়েদের ডিওডারেন্ট ব্যবহার না করাই উত্তম।

৯. মুসলমানি বা সারকামসিশন করানো হলে সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

সতর্কতা

কোনো ওষুধই রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত সেবন করা নিষেধ।

লেখক : কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seo