রাজশাহী মেডিকেলে এডিস মশার লার্ভা

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালরাজশাহী
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতরে, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের বাসভবন ও
ছাত্রীনিবাসের সামনেই মিলেছে এডিস মশার লার্ভা। এ ছাড়া নগরের বিভিন্ন
এলাকার বাড়ির ফুলের টব, পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের পাত্র, দোকানের ব্যাটারির
সেল ও টায়ার এবং রাস্তার ধারে পাইপে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে মিলেছে এডিস
মশার লার্ভার উপস্থিতি।
রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য)
গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য নিজ উদ্যোগে কীটতত্ত্ববিদদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন
করে পাঁচ দিন ধরে মাঠপর্যায় থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এডিস মশার লার্ভার
উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন।
রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালকের
(স্বাস্থ্য) কার্যালয় থেকে গঠিত কীটতত্ত্ববিদদের তিন সদস্যের একটি কমিটি
পাঁচ দিন ধরে রাজশাহীতে এডিস মশার উপস্থিতি নিয়ে মাঠে কাজ করেছে। রাজশাহী
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আশপাশসহ নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নমুনা সংগ্রহ
করেছে তারা। এসব নমুনা থেকে এডিস মশার লার্ভার ব্যাপক উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
এই
কমিটির প্রধান হচ্ছেন সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের জেলা কীটতত্ত্ববিদ
তায়েজুল ইসলাম। কমিটির অপর দুই সদস্য হচ্ছেন রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য
পরিচালকের কার্যালয়ের কীটতত্ত্বীয় কারিগর (টেকনিশিয়ান) আবদুল বারী ও
রাজশাহী সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের কীটতত্ত্বীয় কারিগর উম্মে হাবিবা।
এই
কমিটি ২ আগস্ট থেকে কাজ শুরু করে। পাঁচ দিনে তারা নগরের প্রতিটি ওয়ার্ডের
সন্দেহজনক জায়গাগুলো থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল
কলেজের ফাল্গুনী ছাত্রীনিবাসের সামনে আইসক্রিমের বক্সে জমে থাকা পানিতে ও
অধ্যক্ষের বাসভবনের সামনে নারকেলের মালায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে এডিস
মশার লার্ভার উপস্থিতি মিলেছে। একইভাবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২২
নম্বর ওয়ার্ডের সামনে পড়ে থাকা ভাঙা বেসিন ও ওয়ার্ডের পাঁচটি জায়গায় জমে
থাকা পানিতে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
রাজশাহী মেডিকেল
কলেজের অধ্যক্ষের বাসভবনের সামনে থেকে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ার ব্যাপারে
দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অধ্যক্ষ নওশাদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, মেডিকেল কলেজের
অধ্যক্ষের বাসভবনটি ৮–১০ বছর ধরে পরিত্যক্ত। ওই বাসায় তিনি থাকেন না।
রাজশাহী
সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এফ এ এম আঞ্জুমান আরা বেগম
বলেন, বাংলাদেশে যখন এডিস মশা আছে, তখন রাজশাহীতেও থাকতে পারে। তবে সেই মশা
ডেঙ্গু আক্রান্ত কি না অর্থাৎ মশাটি ডেঙ্গুর জীবাণু বহন করছে কি না, সেটাই
কথা। তবে আক্রান্ত হলে তা পরীক্ষার ব্যবস্থা এখানে নেই। সে জন্য তাঁদের
উচিত মাঠপর্যায়ের তথ্য রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়রকে হস্তান্তর করা।
তাহলে মেয়র ওই মশার প্রজননক্ষেত্রগুলো ধ্বংস করার উদ্যোগ নিতে পারেন।
পাবনায় ডেঙ্গু রোগী ১০০ ছাড়াল
প্রতিনিধি, পাবনা জানান, এ জেলায়
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। পাবনা জেনারেল হাসপাতালে গতকাল
মঙ্গলবার পর্যন্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১১১ জনে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে গত ২৪
ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে ২৪ জন।
জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩
জুলাই পাবনা জেনারেল হাসপাতালে প্রথম দুজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়।
এরপর থেকে প্রতিদিনই চার–পাঁচজন করে রোগী হাসপাতালে আসতে থাকে। সর্বশেষ গত
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫৭ জন রোগী ভর্তি হয়। এরপর দুই দিন রোগী ভর্তি কমে।
রোববার থেকে আবার ভর্তির সংখ্যা বাড়তে থাকে।
নাটোর সদর হাসপাতালে ২৬ জন শনাক্ত
প্রতিনিধি, নাটোর জানান, নাটোরে
ডেঙ্গু সেল খোলার পর গতকাল পর্যন্ত ১০ দিনে জেলায় শনাক্ত হয়েছে ৫৭ জন। এর
মধ্যে নাটোর সদর হাসপাতালে ২৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ভর্তি
করা হয় ২৪ জনকে। গতকাল সদর হাসপাতালে তিনজন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করার পর
তাদের ভর্তি করা হয়।