রেনিটিডিনে ক্যান্সার ঝুঁকি : যেসব দেশ ওষুধটি প্রত্যাহার করেছে
বুকজ্বালা-পোড়ার জন্য যে ওষুধটি অনেকে নিয়মিত খেয়ে থাকেন সেই রেনিটিডিনের সঙ্গে ক্যান্সারের সম্পর্ক আছে, এমন আশঙ্কায় বিশ্বের অনেক দেশে ওষুধটি বাজার থেকে তুলে নেয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আরো একটি খুচরো বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান সিভিএস এটির বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে।
ক্যানাডা ও ফ্রান্স এরই মধ্যে জ্যানটাক নামে বিক্রি হওয়া রেনিটিডিন বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এই ওষুধটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন তদন্ত শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞরা এবং এসব দেশের কর্তৃপক্ষ বলছেন, ঐ ওষুধটি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ঝুঁকি নেই। তবে তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রেনিটিডিনের বিকল্প হিসেবে অন্য কোনো ঔষধ গ্রহণ করতে বলছেন।
কেন এই সন্দেহ
যুক্তরাষ্ট্রের ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)
এবং ইউরোপের ‘ইউরোপীয়ান মেডিসিন এজেন্সি (ইএমএ) গত ১৩ সেপ্টেম্বর
জানিয়েছিল, রেনিটিডিন ওষুধটিতে ‘এন-নাইট্রোসোডিমিথাইলামিনের (এনডিএমএ)
উপস্থিতি পরীক্ষা করে দেখছে তারা ।
এনডিএমএ নামের এই উপাদান মানুষের দেহে ক্যান্সারের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে সন্দেহ করা হয়। এই উপাদানটি প্রাণীর ওপর পরীক্ষা করে এরকম একটা ধারণায় উপনীত হয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
পানি, গোশত, দুগ্ধজাত খাবার, শাক-সব্জি সহ আরো অনেক খাবারে এনডিএমএ আছে স্বল্প মাত্রায়। তবে খুবই স্বল্পমাত্রায় এনডিএম মানুষের শরীরে সেরকম কোনো সমস্যা তৈরি করে না।
রেনিটিডিন ওষুধটি মূলত যারা পাকস্থলীর আলসার বা বুকজ্বালা-পোড়ার সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য।
যেকোনো ওষুধের দোকান থেকে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই এটি কেনা যায়।
কারা কারা এটি প্রত্যাহার করেছে
যুক্তরাষ্ট্রে সিভিএস ছাড়াও এর আগে ওয়ালমার্ট, ওয়ালগ্রিনস এবং রাইট এইডের মতো কোম্পানি এর আগে রেনিটিডিন বিক্রি বন্ধ করে দেয়।
ক্যানাডা ও ফ্রান্সে ফার্মেসির তাক থেকে এগুলো তুলে নেয়া হয়েছে।
ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোও এটি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।
স্যান্ডোজ, যেটির আসল মালিক নোভারটিস, তারাও কয়েকটি ব্যাচের রেনিটিডিন বাজার থেকে প্রত্যাহার করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসিকে।
অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ক্যানাডা, ক্রোয়েশিয়া, চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, হাঙ্গেরি, মেসিডোনিয়া, পর্তুগাল, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রে এটি হয় বাজার থেকে তুলে নেয়া হচ্ছে বা তুলে নেয়া হয়েছে।
গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনও ভারত ও হংকং থেকে জ্যানটাক নামে বাজারজাত করা রেনিটিডিন তুলে নিচ্ছে বলে বিবিসি জানতে পেরেছে।
সূত্র : বিবিসি